বৃহস্পতিবার, ২৯ মে, ২০১৪

ত্রিশাখ জলদাস

এপিটাফ


নিমগ্ন প্রাচীন বৃক্ষজলে তার ছায়া
কাঁপে, আর বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যার আঁধারে
ডুবে চাঁদ কিম্বা কুসুমের গাঢ় ঘুমে
স্পর্শে জ্বলে ওঠে। এই বুঝি অকস্মাৎ
নেমে আসে রাত, এই বুঝি জলস্রোত
ছুঁয়ে দেয় রতি-বিদ্ধ মাছের শরীর।

নিমগ্ন প্রাচীন বৃক্ষতীব্র তীক্ষ্ম হিমে
শুয়ে আছে নিরুত্তর জলের মৃন্ময়,
আর তার দেহে, খাঁজে কিম্বা উৎকীর্ণ
শস্যের দানায় গ্রন্থিত রয়েছে স্থির;
এই পৃথিবীর আদিমতম কথন।

সংবৃত শ্লোক

পাতা পতনের শব্দে উড়ে যাচ্ছে
সবুজ ঘাসফড়িঙ,
মৃত পাখিদের নিয়ে বসে আছে রাত্রি।

আমি খাম খুলে রঙগুলো উড়িয়ে দিলাম
রাত্রিকে একাকী নগ্ন রেখে
চাঁদ চলে গেলে মৃত নদী হেসে ওঠে

আমি ছায়া বিক্রি করি জোনাকিদের আলোয়...

নিবিড় আমাকে ডাকে কীর্তিনাশা।
একটি শীর্ণ নদী ডোবা কিম্বা জলে!
তার অন্ধকারে বালির আড়ালে।
একটি যুগল চোখ,
নুয়ে আছে নির্ণীত জমিনে...
এক শিকারি চতুর।

মানুষের লাশগুলো গুনে গুনে রাখা,
এর বাইরেও কিছু আছে__ নিপুণ সার্কাসে।

 বিমূর্ত স্বর

জেলের নৌকায় বসে তুমি উড়ন্ত মাছের খেলা দেখো,
আর কাঁকর বিছানো পথে একটি বেড়াল দৌড়ে যাচ্ছে
এই দৃশ্য দুটি আমি পাশাপাশি
এঁকে যাচ্ছি ক্যানভাসে
বারবার বদলে যায় আদল
প্রতিটি প্রাণের ভেতরে ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে বিনাশ।

অনন্তের নিসর্গ কন্যারা শুয়ে আছে নক্ষত্রের বনে
আর একটি অন্ধকার দীর্ঘায়িত হচ্ছে
সমর্পিত ছায়ার ভেতর।
এসবই নির্ণীত খোলসাবৃত
এবং দৃশ্যমান
ক্রমাগত ক্রিয়াশীল প্রাণে ও উদ্ভিদে...
দ্বিধান্বিত মানুষেরা ভীতু ও সাহসী,
বৃক্ষের শেকড়ে জমা থাকে জলজ আখ্যান।

শাদা মৃত্যুর ভেতর একাকী নিঃসঙ্গতা, অনিশ্চিত রাত্রি
কী নিপুণ ছায়া বিকশিত হচ্ছে এক খ- ঘুমে;
আর আস্ত একটি আকাশ শুয়ে আছে সমর্পিত ফ্রাই-পেন

শাদা মৃত্যুর ভেতর সমর্পণ,
উড়ন্ত পাখপাখালি।
চারিদিকে ছড়ানো ছিটানো প্রসন্নতা;
হাওয়ার ভেতর ঘুরছে জলকল,
খণ্ড খণ্ড নদী ভারী হয় স্নান ঘরে।

শাদা মৃত্যুর ভেতর শঙ্খচূড়, বিষাক্ত ময়াল
ক্রমাগত দৃশ্যমান ছায়া-অন্ধ মানুষের জিভ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন