বৃহস্পতিবার, ২৯ মে, ২০১৪

অদ্বৈত মারুত


স্বর ভাঙার গান-১


গাছপোকা, যদি যাস চিনে ধানগাছ
শালিককে ইজারা দেব বিস্তর মন
জলপোকা, যদি হস গভীরে অতল
জেনে রাখ, বন্ধু আমার দুরন্ত মাছ।

বায়স-সন্ধ্যায় চলে শিশিরের খেলা
ঘাসের বন্ধু আমি, তাই কণ্ঠ সুরেলা।

আকণ্ঠ পান শেষে তুই হলে গুচ্ছ-গুচ্ছ তারা
মেঘ নেমে ঢেকে দেব কুয়াশায় শহর
যানজটে আটকে যাবে পরাবাস্তব-চাকা
আরে, বন্ধু রাজহাঁসের বাড়ি দেবী সিংহপাড়া!

নিমীলিত চোখে ভাবিকালেই পার হচ্ছে বেলা
দেবী, রোদ পড়ে গেছে, আর নয় অবহেলা...





স্বর ভাঙার গান-২

মুখ ও মুখোশের আড়ালে থাকো; আয়নায় আঁকো প্রতিবিম্ব তোমার। তারপর ভাবো, পৃথিবীটা নাবালিকার খোঁপা বাঁধা চুল!

জন্মসূত্রপাঠ কবেই চুকে এসেছি গ্রাম্য পাঠশালায়! তবু বিদ্যা ফলাই না এই শহরের কোনও পাঠশালায়। একাকী হাঁটি; নীরবে, নিবৃতে। ফাঁকে-ফাঁকে দেখে নেই মুখোশের আড়ালে লুকানো তোমার কৃষ্ণগহ্বর। পাখি কিছু সঙ্গী হলে শুনে নিই তার ডানা ঝাপটানোর গান; জীবনসূত্রের আপডেট কোনও।

জন্মসূত্রে গ্রাম্য বলে লাঙলের ফলার ধার আমারই কিন্তু বেশি জানা!

ঝিঁঝিঁ


এই শহরের সব গাছই শহুরে;
ঝিঁঝিঁপোকাহীন!
মাঝরাতে ডাহুকের চিৎকার
হয়ে ইথারে-ইথারে ভাসে
পাহারাদারের হুইসেল!
মাঝে-মাঝে গাড়ির প্যাঁ-পুঁ শব্দ আসে,
ব্রেক কষা শিৎকারে জেগে ওঠে
সিটি করপোরেশন-কুকুর!

মা ডাকছেন। গাঁয়ের কুকুরগুলো নীরবে তাকিয়ে আছে
পথপানে চেয়ে। ও পরী, ডানা দে খুলে, ঝিঁঝিঁ ডাকছে...

পরিযায়ী পাখি এলে বলবেন
বেদনার রঙ বুঝি ধূসর-কালো অথবা গাঢ় নীল; পাঠশেষে হল না বোঝা আজও!

বাতাসের ভাষা বুঝেই পালতোলা নাও চলেছিল পথ, একাকী। কস্তুরির মাথায় বিলি কেটে এগিয়ে গেল কত সহস্র পথ! জাতিসংঘ ঘুরে, হোয়াইট হাউস হয়েও আসা হল বেশ। তবু বোঝা গেল না আকাশের গায়ে কেন কালো-কালো মেঘ খেলা করে; নরম ঘাসে সকাল ও সন্ধ্যায় শিশির নামে বিস্তর শোক হয়ে।
পরিযায়ী পাখি এলে বলবেন, তিনি যেন বেদনার একটি রঙের নাম বলে দেন...

পরামর্শ

পাতাবনে ঢুকে যাচ্ছে সাইকা;
কামনার রোদে পুড়িয়ে দেহ
আজ এই অবেলায়...

সীমান্তে প্রহরি বসা;
কাঁধে আগ্রাসী বন্দুক।
ইতিউতি চোখ মারে;
পাতাবনে যেতে উন্মুখ!

আঁধারে, বনে জমে উঠেছে ঘোর
ইরৌসের ছুঁড়ে দেওয়া তীরে;
যেদিকে তাকাই, শুধুই কাম-কাম গন্ধ
ভরে উঠেছে আজ পাতাবন ঘিরে।

তবে গুলি ছোঁড়ার আগে বন্দুক দেখে নেওয়া ভালো!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন