বৃহস্পতিবার, ১২ জুন, ২০১৪

একটি নদীর মৃত্যুর পর।। মোজাম্মেল হক নিয়োগী



অতঃপর নদীটির মৃত্যু হলো-

চঞ্চল নদীটি নৃত্য করে চলে অবিশ্রাম শ্রাবণের জলধারায়
নদীটি ঢেউয়ের ঠোঁটে আলোর ফুল ফুটিয়ে শুধু এগিয়ে যায়
দুপাশে ফলিয়ে যায় শস্য ফুল ফল, উর্বর করে কংক্রীট মাটি
সে কি জানে, তার সামনেই শুয়ে আছে ভয়ংকর কালো অজগর?

নদী চলে তার খেয়ালে, বড় খেয়ালী বাউলের মতো গান গেয়ে
অথচ একদিন সে চলে যায় ধীরে ধীরে অজগরের পেটে
অজগর গিলে খায় হাজার বছরের পুরনো দরিদ্র কৃষকের নদী
নদীটি মায়ের বুকে রেখে যায় তার বিস্মৃতির ছাপ।

নদীটির বিস্মৃতির পাশে বসে আছে অসংখ্য প্রেমিক-অচেতন, নিদ্রামগ্ন
কেউ কেউ মদ্যপানে বিভোর, হাত-পা অসাড়, প্রতীক্ষারত
মৃত্যুর পরবর্তী উৎসবে বক্তৃতা করার বিপুল আয়োজন।

নদীর ঢেউয়ের ঠোঁটে জ্বলতো যেসব আলোর কণা
অন্ধকার ব্লটিং পেপারের মতো শুষে নিল সব
শিলাঝড়, বিদ্যুৎ, বজ্রপাত ঘনীভূত হয়ে আসে
প্রেমিকগণ, এসো, আয়োজন করো মৃত নদীর শোকসভা।

জাগরণের শৌর্যবীর্য নিঃশেষ, শোকসভা ছাড়া আর কিছু করার নেই।

বলো, কী ভয়ানক সুন্দর, নদীকে গিলে খায় কালো অজগর
এর চেয়ে ঢের বেশি কী আর বলার আছে তোমাদের
হে, শৌর্যবীর্যহীন প্রেমিকগণ, বলো, সুন্দর, বড় সুন্দর অজগর।

আর চেয়ে চেয়ে দেখো, দাবদাহ, হাহাকার শস্যের মাঠ
হাহাকার করা বৃক্ষের আর্তনাদ, শুকিয়ে যাওয়া পুষ্পের বিলাপ
সবুজ পল্লবের ঝরে পড়ার কী অদ্ভুত বিপুল আয়োজন!

হে প্রেমিকগণ মনের অজ্ঞাতসারে হলেও একবার বলো,
এমন বীর্যহীন প্রেমিক নিকৃষ্ট পশুর চেয়েও অধম।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন