তর্কটি অতি পুরনো। তবে
অবশ্যই মৌলিক। তাই কাসুন্দি ঘাঁটা চলছেই। যে যাঁর যাঁর জায়গায় দাঁড়িয়ে রায়
টানছেন। ফলে আলোচনা আর উপসংহারের দিকে এগোয় না। কিন্তু আমরা এগুতে চাই।
দেখাতে চাই কীভাবে ধর্মবাদী ও তার প্রতিবাদী দু’ দলই একরোখা যুক্তির জটে
আটকে আছেন। যারা ধর্ম মানি, তাদের “ধর্মই নৈতিকতার উৎস” এ দাবিকে ধর্ম
নিজেই তো মানছে না। কাজেই খামাখা নাস্তিকদের দুষে কী লাভ! “ফুল সুন্দর,”
“চুরি অন্যায়” -- এ রুচি ও বোধ মানুষের সহজাত! এখানে দ্বিমত নেই কারো,
এমনকি তার অবকাশও নেই। প্রাণিজগতের বিকাশ ও বৈশিষ্ট্য এর উদাহরণ! মুরগি ডিম
তা দেয়া প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি হয় না। কিন্তু জড় থেকে প্রাণে উত্তরণের
জটিল ও বিস্ময়কর প্রক্রিয়া ঠিকই সম্পন্ন করে। মশা অনায়াসে ওড়ে, ঘাসফড়িং
স্বতই লম্ফবিদ। তেমনি ভালো ও মন্দের ন্যায় ও অন্যায়ের ধারণা মানুষের জন্মগত
প্রবণতার অন্তর্গত। মানবশিশু ভূগর্ভে বড় হলেও তার ভেতর নীতিবোধ তৈরি হবে।
রোখার উপায় নেই। এখানে শাসন অপাঙক্তেয়। এ কারণে সাধারণত সকল ধর্মই সহজাত
বৃত্তির অনুকূল। ইসলাম একে বলেছে ফিৎরাত বা স্বভাবধর্ম, এবং এর বিকাশে
দিয়েছে বিস্তর তাগিদ ও নির্দেশনা। কাজেই যে ধার্মিকরা ন্যায়বোধকে ধর্ম থেকে
উদ্ভূত বলেন, তাঁরা ধর্মের বিপক্ষেই কথা বলেন।
তাহলে সিদ্ধান্ত, নৈতিকতা ধর্ম
থেকে প্রসূত নয়। তবে কি নীতিবোধ থেকেই ধর্মের জন্ম হয়েছে? হ্যাঁ, এমনটি ধরে
নেয়া যেতে পারে। মানবরচিত ধর্মের তো কথাই নেই, নৈতিকতা ঈশ্বরপ্রদত্ত
ধর্মেরও পূর্বতন। ধর্ম হলো কিছু আদেশ-নিষেধের সমষ্টি। তো, আদমকে আল্লাহর
প্রথম আদেশ- জান্নাতে থাকো, নিষেধ- ওই গাছের কাছেও যেয়ো না। আদম তা মানতে
রাজি হলেন। আমরা দেখবো, তার রাজি হবার পেছনে কাজ করেছে এ নীতিবোধ যে, আমাকে
দয়া করে যিনি তৈরি করলেন তাঁর আদেশ মেনে চলা উচিত।
আর্থার সি ক্লার্ক বলেছিলেন,
মানবেতিহাসের বৃহত্তম ট্র্যাজেডি হলো ধর্মের দ্বারা নৈতিকতা অপহরণ।
কল্পবিজ্ঞানী ক্লার্কের এ খ্যাপা বিবৃতির কারণ স্পষ্ট নয়। ধর্ম কীভাবে
নৈতিকতাকে একটা স্পষ্ট কাঠামো ও প্রমিত মান দিয়েছে, তিনি তা বিচার করেন নি।
ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে মূল্যবোধে পার্থক্য রয়েছে, তাই ব্যক্তির ইচ্ছানির্ভর
হলে নৈতিকতা তার সর্বজনীনতার শক্তি হারিয়ে স্বেচ্ছাচারে পর্যবসিত হবে।
ক্লার্ক নিজে একজন সমকামী ছিলেন, তিনি নিজের জন্যে যা পছন্দ করেছেন তা যদি
গোটা মানবজাতির জন্যে কামনা করেন, কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে পৃথিবী? অতএব নৈতিকতা
কিছুতেই ব্যক্তিক ও ঐচ্ছিক হতে পারে না। এমনটি হলে মানবিক নৈতিকতা
অনিবার্যভাবেই অমানবিক হতে বাধ্য। ধর্ম নৈতিকতাকে পৃষ্ঠপোষকতা না করলে
নৈতিকতা নামে আজকে আমরা যা পেতাম তা হতো একটি ভয়াবহ অস্থিরতা, আর চারদিকে
যারা নৈতিকতার গুণগান গাইছেন, এর ভিত নিয়ে বচসায় মাতছেন, তারা এর সুযোগই
পেতেন না। কেননা বহু বিরুদ্ধ মতের দ্বন্দ্বে নৈতিকতা আপনিই ধ্বসে পড়ত। তাই
আমাদের দ্বিতীয় সিদ্ধান্ত- ধর্ম নৈতিকতার উৎস নয়, তবে প্রতিপালক।
নালিশ শুনি, ধর্মের হাতে রয়েছে
মাত্র দু’টি অস্ত্র: লোভ ও ভয়। ধর্ম স্বাধীনতা হরণ করে, বাধ্যতা আরোপ করে।
ধর্মীয় নৈতিকতার কোনো মূল্য নেই, কেননা মানুষের স্বাধীনতা হরণ করাটাই
অনৈতিক। কথা সুন্দর, তবে সত্য নয়। ইসলাম যদি ধর্ম বলে গণ্য হয়, তবে
নিন্দাসূচক স্রেফ লোভ ও ভয়ের হাতিয়ার থাকার অভিযোগটির জবাব দিতে সেইসব
নিন্দুকই যথেষ্ট, যাঁরা বলেন: ইসলামে মৃত্যুদণ্ডসহ জীবন্ত মানুষের হাত-পা
কেটে ফেলার মতো নিষ্ঠুর আইন রয়েছে। নীতিবাদীদের মনে রাখা উচিত যে, নৈতিকতা
দিয়ে ব্যক্তিজীবন আংশিক চলতে পারে, কিন্তু সমাজ আদৌ তা পারে না। পৃথিবীতে
এমন কোনো দেশ নেই যেখানে নৈতিকতা উন্নত বলে আইনের দরকার হয় না।
স্বাধীনতা মানে কারো অধীনে না
থাকা নয়। এর মানে নিজের অধীনে থাকা। অর্থাৎ প্রবৃত্তির দাসত্ব। মানুষ কখনোই
পূর্ণত স্বাধীন নয়, ছিলও না। যুগ যুগ ধরে মানুষ বিবিধ প্রাণী, পদার্থ ও
বৃত্তির দাসত্ব করে এসেছে। মানবসভ্যতার ইতিহাসের বিশাল অংশ জুড়ে আছে
দাসত্বের ইতিহাস। মিশরীয়, রোমান, গ্রীক, ব্রিটিশ ইত্যাদি প্রাচীন
সভ্যতাসমূহের ঐতিহাসিক কীর্তিগুলো ক্রীতদাসদের রক্ত-ঘাম-অশ্রু দিয়েই তৈরি
হয়েছে, ওই স্তম্ভগুলো চেপে রেখেছে নির্যাতিত মানবাত্মার অনন্ত হাহাকার!
প্রাচীন রোমে জনসংখ্যার চে’ দাসসংখ্যা ছিল গরিষ্ঠ। সেই দাসত্ব আজও চালু আছে
দুনিয়াজুড়ে, অন্যতর রূপে। এখন সামন্তবাদের জায়গায় এসেছে
পুঁজিবাদ-সাম্রাজ্যবাদ। ব্যক্তিক ও তাত্ত্বিক প্রভুরা যখন ছিল না, দাসত্ব
তখনো ছিল, আদিম মানুষ তখন সূর্যের আগুনের বৃক্ষের পুজো করেছে। কোথাও কোথাও
এখনো তা আছে। আর আজকের পণ্ডিত-তাত্ত্বিকরা তো প্রবৃত্তির পরোক্ষ উপাসক।
এঁরা যে নীতিবাদ প্রতিষ্ঠা করতে চান, তা-ও প্রবৃত্তির দাসত্ব না হবার কোনো
যৌক্তিক কারণ নেই। এভাবে আমরা প্রমাণ করতে পারি যে, ইতিহাসের কোনো পর্বেই
সত্যিকার অর্থে মানুষ স্বাধীন ছিল না। তাই ধর্মের ওপর স্বাধীনতা হরণের
অভিযোগ স্থূল ও ভিত্তিহীন। বরং সমস্ত কাল্পনিক উপাস্য ‘লা’ শব্দে নাকচ করে
ইসলাম তার যাত্রা শুরু করেছে। বস্তুত ইসলাম স্বাধীনতা হরণ করে নি,
স্বাধীনতার একটা সীমা ও কাঠামো বেঁধে দিয়েছে। সামাজিক শৃঙ্খলার প্রয়োজনে
শাসনদণ্ড থাকলেও সেটি ইসলামের প্রতিষ্ঠা ও প্রসারের মাধ্যম নয়, ইসলামের মূল
শক্তি হলো প্রেমের শক্তি। ইসলাম বোঝা চাপিয়ে দেয় নি, শুধুই পথ দেখিয়ে
দিয়েছে।
ব্যক্তিক মূল্যবোধ ব্যক্তিভেদে
বিভিন্ন হতে পারে, কিন্তু সামাজিক নৈতিকতার ভেতর একটা সর্বজনীন ঐক্যসূত্র
থাকা চাই। দরকার একটা প্রমিত মান। নইলে নৈতিকতা কখনোই সামাজিক হবে না,
কেননা নীতির ধারণা প্রকৃতপক্ষে আপেক্ষিক। আমাদের দেশে শিক্ষক বা গুরুজনের
সামনে ধূমপান অন্যায় বলে ভাবা হয়, কিন্তু ইউরোপে আদৌ তা হয় না। বিশ বছর
বয়েসি ছেলের দৃষ্টিভঙ্গি তার পৌঢ় পিতার সঙ্গে অনেক ক্ষেত্রেই মিলবে না।
দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে পাকিস্তান স্বাধীন হয়েছিল, পঁচিশ বছর পরে
বাংলাদেশের জন্মের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হলো ওটা ছিল একটা ভুল দর্শন।
দেখা যাচ্ছে নৈতিকতা
স্থানকালপাত্রভেদে পরিবর্তমান। তাহলে স্থির কাঠামো ও প্রমিত মান দাঁড়াবে
কীসের ভিত্তিতে? কী শর্তে কাকে নৈতিকতার সর্বগ্রাহ্য রূপরেখা প্রণয়নের
দায়িত্ব দেয়া হবে? ধর্মমুক্ত নীতিবাদের প্রবক্তারা এখানে নীরব। ধর্ম হলো
নৈতিকতার ঐতিহাসিক পর্যবেক্ষক, নিজেরা ধর্ম মানেন না বলে এ সত্য স্বীকার
করতে তাঁরা স্বস্তিবোধ করেন না, অন্যদিকে বিকল্প কোনো কর্তৃপক্ষের নামও
প্রস্তাব করতে পারেন না। ফলে নৈতিকতা নিয়ে এঁদের সকল তর্ক স্রেফ অর্থহীন
বিতণ্ডায় অবনত হয়। আপনি কারাগারে গিয়ে অপরাধীদের সঙ্গে কথা বলে দেখুন, তারা
নিজেকে নির্দোষ দাবি করে খুন ও দুর্নীতির পক্ষে নানা যুক্তি ও কারণ
দেখাবে।
মানুষের জন্যেই ধর্ম, ধর্মের
জন্যে মানুষ নয়। তাই সকল ধর্মই কমবেশি সত্যলগ্ন, মনুষ্যত্বের বিকাশপ্রয়াসী।
ঐতিহাসিক প্রয়োজনেই এসব ধর্মের কিছু অবতারিত ও কিছু রচিত হয়েছে, তবে
অনুসারীদের কাছে তাদের আচরিত ধর্ম ঐশী। এ গভীর বিশ্বাস ও সমীহই তাঁদেরকে
নিজ নিজ ধর্মের বাণীকে দুর্বল মানবিক অনুমান ও যুক্তি দিয়ে বিচার করা থেকে
নিরস্ত রাখে। বস্তুত সত্য উপলব্ধির জন্যে অনুমানের ওপর নির্ভর করা
ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাপার। “এ বিষয়ে তাদের কোনো জ্ঞান নেই। তারা কেবল অনুমানের
ওপর চলে। অথচ সত্যের মোকাবেলায় অনুমানের কোনো মূল্য নেই।” (কুরআন, ৫৩:২৮)
কার্ল মার্ক্স অবতার ছিলেন না,
যে মাথা দিয়ে তিনি সমাজতন্ত্র তৈরি করেছিলেন, সবার ঘাড়ের ওপরই একটি করে
সেরকম মাথা রয়েছে, গড়া ও ভাঙার অধিকারও আছে। তাই মার্কসের সমাজতত্ত্ব যখন
মানুষকে স্রেফ উৎপাদক যন্ত্রদাস হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করল, তখন মানুষ
একে ঝেঁটিয়ে বিদেয় করতে দেরি করে নি। মানুষ হয়ে মানুষের জন্যে জীবনবিধান
প্রণয়নের চেষ্টাই ধৃষ্টতা। সংকীর্ণ ও অদূরদর্শী জ্ঞান নিয়ে কোন অধিকারে এক
বা কয়েক ব্যক্তি গোটা সমাজ বা মানবজাতির জন্যে বিধান প্রণয়ন করবে?
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বিপ্লবী ও
নীতিবাদী ছিলেন হযরত মুহাম্মদ (সা.)। তিনি বলতেন: “আদ-দীন আন-নাসীহা”;
অর্থাৎ কল্যাণকামনাই ধর্ম। তিনি মানবপ্রেম ও দয়ার আদর্শ প্রচার করেছিলেন।
বলেছিলেন, “শ্রেষ্ঠ মানুষ ওই ব্যক্তি, যে মানুষের উপকার করে।” আর “প্রকৃত
মুসলিম সে-ই, যার হাত ও মুখ থেকে সবাই নিরাপদ”। কুরআন প্রত্যেক মুসলিমের
সম্পদে অপর প্রতিবেশী, আত্মীয়, দরিদ্র, অনাথ, রুগ্ন, অসহায় ও বিপদগ্রস্তের
অধিকার ঘোষণা করেছে। রাসূল (সা.) কিছু চরিত্রকে ইসলাম থেকে খারিজ করে
দিয়েছেন: যারা পড়শিকে অভুক্ত রেখে খায়, মানুষকে সত্যের দিকে আহ্বান ও
অন্যায় থেকে নিবৃত্ত রাখতে চেষ্টা করে না, বড়দের সম্মান ও ছোটদের স্নেহ করে
না, আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করে ইত্যাদি। ইসলাম তার উদার সত্যবাদ, মহত্ত্ব,
মানবপ্রেম, দয়া ও ক্ষমাশীলতার গুণেই পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা সম্প্রসারণশীল
জীবনব্যবস্থা।
আধিপত্যবাদী পরাশক্তিগুলো
ইসলামকে প্রতিরোধে প্রাণপণ করেছে, কিন্তু ফল হয়েছে বিপরীত। অভিযোগ খতিয়ে
দেখতে এসে মুক্তচিন্তার মানুষেরা সত্যের স্পর্শে নতুন প্রাণে প্রাণিত হয়ে
ব্যাপক হারে ইসলামে দীক্ষিত হচ্ছে। কেউ এমন কোনো সদাচারের কথা বলতে পারবে
না, যার দিকে ইসলাম আহ্বান করে না; তেমনি মানুষের দেহ-মন ও সমাজের জন্যে
ক্ষতিকর সমস্ত বিষয়ই দূরে রেখে ইসলাম তার বিস্তীর্ণ আয়তনের সীমান্ত ঘিরে
নিশ্ছিদ্র দেয়াল তুলে দিয়েছে। ফলে ইসলামের ভেতরে থেকে অন্যায়, দুর্নীতি বা
সন্ত্রাসে জড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।
এমন স্বয়ংসম্পূর্ণ ও আলোকিত
জীবনদর্শনের অনুসারীদের অন্ধকার হাতড়ে নৈতিকতা খুঁজতে হয় না। সংশয়ে সাঁতরে
ফেরা ক্লান্ত কোনো কল্পনাবিদেরও দ্বারস্থ হবার দরকার পড়ে না। প্রকৃত মুসলিম
মানেই প্রাণপ্রাচুর্যে উজ্জীবিত একজন মানুষ। রাসূল (সা.) বলেছেন: “বৈষয়িক
প্রাচুর্য কিছুই নয়, আসল ঐশ্বর্য হলো অন্তরের ঐশ্বর্য”।" সেই ঐশ্বর্য ভোগের
নেশায় মাতাল হয়ে পড়ে থাকতে শেখায় না, ত্যাগের অপার আনন্দে মানুষ ও সমাজের
জন্যে আপনাকে উৎসর্গ করতে শেখায়। মানবকল্যাণে নিরন্তর কাজ করে যেতে প্রেরণা
যোগায়। মুসলিম বিপদে ভীত হয় না, দুঃখে ভেঙে পড়ে না, সঙ্কটে হতাশ হয় না;
নিশ্চিন্তে আশ্রয় নেয় এই অভয়বাণীতে: “নিশ্চয়ই আমার সালাত, আমার কুরবানী,
আমার জীবন এবং আমার মৃত্যু মহাজগতের প্রতিপালক আল্লাহরই জন্যে।” (কুরআন,
৬:১৬২)
মুসলিম কখনোই সম্মোহিত হয় না।
বহু লোক কিছু একটা করলেই দেখাদেখি সে তাতে লিপ্ত হয় না, কেননা সে জানে
পরিসংখ্যান দিয়ে সত্যের নির্ণয় যথার্থ নয়, কেননা সে বিশ্বাস করে: “তোমার
প্রতিপালকের বাণী সত্যতা ও ইনসাফের দিক দিয়ে পূর্ণতা লাভ করেছে, তাঁর বাণী
পরিবর্তনের কেউ নেই, তিনি সবই শোনেন ও জানেন। তুমি যদি দুনিয়ার অধিকাংশ
লোকের অনুসরণ করো, তবে তারা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিভ্রান্ত করে ফেলবে,
তারা তো নিছক ধারণা ও অনুমানেরই অনুসরণ করে, আর তারা ধারণা ও অনুমান ছাড়া
আর কিছুই করছে না। (কুরআন, ৬:১১৫-১১৬)
কুরআনে বিশ্বাসীদের আপনি কখনো
ক্ষুধা ও দারিদ্রে অধৈর্য হতে দেখবেন না, কারণ: “আর নিশ্চয় আমি তোমাদেরকে
ভয়, ক্ষুধা এবং ধন-প্রাণ-শস্যের অভাব দিয়ে পরীক্ষা করবো; এবং ওই
ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও, যাদের ওপর বিপদ আপতিত হলে তারা বলে: নিশ্চয়ই আমরা
আল্লাহরই জন্যে এবং অবশেষে তাঁর কাছেই আমরা ফিরে যাব। এদের প্রতি তাদের
প্রভুর পক্ষ হতে শান্তি ও করুণা বর্ষিত হবে এবং এরাই সুপথগামী।” (কুরআন,
২:১৫৫-১৫৭)
প্রকৃতপক্ষে এঁরাই সঞ্চয় করেছে
মনুষ্যত্বের অধিকতর গুণাবলি, যেসব গুণ সুন্দর জীবন ও শান্তিময় সমাজ
প্রতিষ্ঠার পূর্বশর্ত। তাই সুন্দর পৃথিবীর স্বপ্ন সম্ভব করে তুলতে
ন্যায়নিষ্ঠ মুসলিম অথবা কুরআন-সুন্নাহর আলোকে আলোকিত মানুষের বিকল্প নেই।#
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন