রবিবার, ২২ জুন, ২০১৪

শৈশবের ডাইনিরা ।। ফজলুল হক তুহিন


 Fazlul Haque Tuhin

শৈশবের দিনগুলি আমার কেটেছে দাদির রহস্য গল্পের আসরে
আমার চোখের পাতা পড়তো না কখনো আরব্য রজনির
বিস্ময়জাগানো সব কাহিনির ক্রম যখন সিনেমা হয়ে ভেসে উঠতো অদ্ভুত
দেখতে পেতাম ডাইনির হাতের ভেতর থেকে বের হয়ে আসছে যাদুর
ভয়াল পশুরা, আঁচলের মধ্যে থেকে হা হা হাসিতে হাজির
অতিকায় হিংস্র দৈত্য- আমরা ভয়ে গুটিশুটি মেরে
পরস্পর জড়াজড়ি করে থাকতাম
তবু গল্পের শেষ না শুনে গল্পের হাট ভাঙতাম না কিছুতেই
আমাদের খুশি সাঙ্গ হতো ডাইনি ও দৈত্যের বিনাশে
সেই দাদি সেই গল্প আর সেই আসরের রূপরসগন্ধ আর নেই।

ফিরে আসে না কিছুই
তবু আবারও ফিরে এসেছে ডাইনি, ফিরে এসেছে দৈত্যের দিন
ডাইনির আঁচলের তলে নাক ডাকে, হুঙ্কারে কাঁপিয়ে তোলে চারদিক
মাঝে মাঝে বের হয়ে আসে রক্তের তৃষ্ণায়
মুড়ি মুড়কির মতো গিলে খায় মানুষের দেহপ্রাণমন
ডাইনির হাতের যাদুতে হঠাৎ প্রকাশ পায় চিতাবাঘ
ঘাড় মটকে হালুম করে খেয়ে ফেলে নারীশিশুযুবা, ঘরবাড়ি, সবুজ প্রান্তর
অতঃপর বের হয়ে আসে দাঁতাল শুয়োর
উল্লুকভাল্
লুক, অজগর, শেয়াল, কুকুর, কুমির, গণ্ডার
বসে বসে ভাবি মানুষের মতো দেখতে ডাইনি কীভাবে হয়
আচ্ছা, ডাইনির কী তবে আমাদের মতো আছে একটি হৃদয়?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন