শনিবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৪

আহমেদ স্বপন মাহমুদ ।। বড়লোকের গাড়ির সাথে ছোটলোকের রিক্সা ভ্যান



বড়লোকের গাড়ির সাথে ছোটলোকের রিক্সা ভ্যান
পাল্লা দিয়া ছুটছে
ভাঙা রাস্তা ভাঙাচোরা মুখ
বড়লোকি মান ও যান আর ছোটলোকি প্যাডেলমারা শরীর দুলছে
একসাথেই তারা চলছে।
বড়লেকের গাড়ি উইড়া যায় বাতাসের আগে আসমানের মেঘের লগে
ছোটলোক খালি পিছনে পড়ে, পড়তে পড়তে মরে, বড়লোকে খালি মারে
আর সামনে ও পিছনে দুলতে থাকে ঝুলতে থাকে একরাশ মিষ্টি গোল্লা
হাওয়া মিঠাই মিশ্রি বাতাসা
অার ঝুলতে থাকে কলা ও মূলা ইতিহাসে
আমি না তুমি কে কারে কত বেশি বাসে
দেয়ালের টিকটিকি ও ঘড়ি বলতে থাক
আমাদের শরীরগুলা যা কিছু গোপন প্রকাশ করতে থাক
আমাদের মনগুলা যা কিছু গোপন অভয়ে বলতে থাক।

অতসব চলা বলা ও থাকার মধ্যে আঙুলের ফাঁকের সমান ফারাক আছে
ফারাক বাড়তেছে বড়লোক ছোটলোকে
ফারাক কমতেছে রাষ্ট্র ও কর্পেোরেটে
ফারাক কমতেছে জেট বিমান নামতেছে
জোটবদ্ধ রাজনীতি জমতাছে শীতে
জমতে জমতে বরফ হয়া যাইতাছে
এখন আমাদের বরফ-আইসক্রিম খাইবার সময়!
বরফ হয়া যাইতাছে প্রেম ও বিবাহ বিরহ
এখন কেবল অরোহণের সময় যে যেভাবে পারে
আঙুল ফুলে কলাগাছ হও একপায়ে দঁড়ায়া থাক তালগাছ!

আর আঙুল চুষতে থাক ছোটলোক
সুন্দরবন মারা যাক কার কী
রামপাল মোটাতাজা হউক
তীরধনুক মানুষ মারার মেশিনপত্র আসতে থাক
নাকডাকা ঘুমে জনগণ আরো খানিকটা ঘুমাক

আমাদের কলে গম আর ধান একসাথে চলে
আমাদের ক্ষেতে মাছ চাষ হয় ধানের বদলে
ক্ষেতগুলা চলে গেছে যার তার হাতে বেনিয়ার চালে
আমাদের মন বলছে আজ পালিয়ে যাবার দিন
আজ আমাদের পালিয়ে যাবার রাত কুপোকাত!

কাল রাতে হতে পারে আমাদের অবৈধ প্রেম
সেই বার্তা তোমারে কবেই যে জানালেম।
বৈধতা বিষয়ে উকিল পাড়ায় মহারোল চলছে
মারী ও মড়কে যারা তা দিচ্ছে তারা ফুটাক
বাঘের বাচ্চা, অশ্বডিম্ব নিয়া তারা পড়ে থাক

বড়লোকের ঝি ঘুমাক, ছেটলোকের ঝিয়েরা সারাক বিষবেদনা যত
কত কত ছোট ছোট ডানকিনা মাছ রুই কাতলা হয়া গেল
কত পাতিহাঁস উড়ে গেল আকাশে বিমানের লগে
আহা কী সুন্দর হাঁসের পালক
অপলক তোমার দীর্ঘ চেয়ে থাকা
ছায়ারা বলে দেয়
গাড়িঘোড়া হাতির পিঠে চড়া আহা কী সেইসব দিন
কেবলি মলিন হীন শুধু অমলিন!

কাল রাতের মরণ হলে কত যে ভালো হত মন
অকাল মরণ
আমাদের মন
ভেজা ভেজা তাজা তাজা
বিচিত্র সুবাস ওহো সুন্দরবন!—

তাকে ঘিরে বড়লোক ও ছোটলোক একসাথে আঙুল চাখে
আর বিপাকে পড়েছে বিচিত্র প্রাণ বাঘ ও হরিণ
সময়ের ঋণ শুধায়
কে কার স্বজন
কার ধন চোখের সামনে কে নিয়া যায়
একসাথে চলে ছোটলোকি রিক্সা ভ্যান আর বড়লোকি গাড়ি

মা রে, দানবের দেশে কতদূর আমাদের আপনার বাড়ি।

শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৪

যুগ্মস্বপ্ন ।। ফাহমিদা ইয়াসমিন



আমার যত স্বপ্ন সবই তোমায় নিয়ে আঁকা.
মনের কোনে ভাসছে আজও কেবল তোমার ছবি
তোমার সঙ্গে যত আমার দিন কেটেছে রাত কেটেছে সব
আজ কেন যে পড়ছে মনে, রঙধনু রঙ ছবি

কোনোদিনই ভেবো না আর আমি তোমার নেই
আমি আছি রঙধুন রঙ, যা শ্রাবণের মেঘে
দেখো তুমি পড়ব ঝরে তোমার তৃষ্ণা পেলে
তুমি আলতো করে ছুঁয়ে দেবে গভীর অনুরাগে!

আমি থাকব তোমার, থাকব তোমার অধীর অপেক্ষায়
তোমার দিনের কাজের ফাঁকে, রাতের ঘুমের ঘোরে
আমার প্রাণের স্পর্শ তুমি করবে অনুভব
আমার মনের আঁকাশ যদি দেখতে প্রিয় তুমি
তুমি ছাড়া শূন্য আমি, শূন্যমরুভূমি।

মনের জন্য মন ।। মনিরা ফেরদৌসী মনি

 

আজ আমরা জেগে উঠবো সেই জন্য
যে কারন শুধুই মন জানে
মন মানে না কোন বাধা
যেন সব কিছুই নিজের।।

আর নিজের জন্য মন জেগে উঠবেই
সারেক্ষন যেটা ভাবি তাও কিন্তু মন দিয়ে
আর মন বোঝে মনের ভাষা __
তাইত পারি না মনকে বাধা দিতে
মন দিয়েই মনকে ভালবাসি।।
মন চায় সারাক্ষন মনের কাছেই থাকি
যেন মন শুধু মনকেই ছুয়ে চায় __
মনের অজান্তে মনকে এত ভালবাসি
যা আমার অতীতকে বুঝতে দেই না ।।

রবিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৪

তিরিশ বছর আগে ।। মনিরা ফেরদৌসী মনি


তুমি কি এখনও আছ তিরিশ বছর আগের মত
পথ চেয়ে কি দাঁড়িয়ে থাক তিন রাস্তার মোড়ে ?
ঘুম ভেঙ্গে জানালায় খুঁজ কি রাতের আঁধারে
চিঠি গুলো কি রেখেছ বই এর পাতার নীচে ?

জেগেছিল শুকতারা তোমার আলতো পরশে
হংস বলাকারা বলে যায় কথা শুনেছ কি তুমি
নির্জনে ঘুঘুর ডাকে আসে নেমে বিরহীর অশ্রুজল
জমে আছে কত কথা বলব যে গানে গানে ।।
তোমারই বিরহে কত নিশি কেটেছে এমনি করে
একা একা বলেছি কথা তারাভরা আকাশের সাথে
বলাকারা উড়ে যায় ঐ দূর নীলিমার পানে ।
তিরিশ বছর কেটে গেল আজ তোমাকে না বলে
ছায়া হয়ে কেউত এল না তোমার মত করে
আছ কি তুমি যেমন ছিলে তিরিশ বছর আগে
শিউলি ফুলের গন্ধ হয়ে তারা ভরা রাতে ...।।

শনিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৪

ডানা ভাঙা রোদ ।। বীরেন মুখার্জী

তোমার মতো প্রেমার্ত স্পর্শ কেউ করেনি,
চিবুক ছুঁয়ে বলেনি কেউ পাশে এসে বসো;
এই গুমোট হাওয়ার রাতে দীর্ঘ অপেক্ষা ভেঙে
নেমে যাও গভীরে_যেখানে জন্মান্তরের ওমে গাঁথা আছে
যাবতীয় ক্ষুধা-তৃষ্ণার স্বরলিপি_অকৃপণ শিল্পের রসদ।
চৌরাশিয়ার লঘু মূর্চ্ছনায় সেধে নাও নিজস্ব সুর।
আমি স্বপ্নের স্বল্পদৈর্ঘ্য ইশতেহার মুছে ফেলতে ফেলতে
তলিয়ে যাই প্রতিদিন, তৃষ্ণার গাঢ় আলিঙ্গনে।
অবশেষে হাতের তালুতে দেখি পাতা ঝরা শীত;
ওমের অপেক্ষা নিয়ে লাল-নীল বিভ্রম ছড়ায় অন্য কেউ।
তবে কী দৃশ্যের ওপার কিংবা তৃষ্ণাব্যস্ত রাতের দেয়ালে
লেখা হলো আমারই নাম?
হায়! ভোরের কুয়াশা ভেঙে পাখা মেলে নির্ভেজাল রোদ,
আর সমার্থক হতাশায় ভেঙে পড়ে পাললিক ডানা
কবিতার সংশ্রবে।

পতন ।। আলমগীর রেজা চৌধুরী


দূরাগত অভিমানে ভাঙছে জীবন,উঠছে ঝড়
এতো নেউসব্দের রিনিক ঝিনিক বুকে
আত্মম্ভরী মানুষ ;
ঝুল বারান্দায় বসে দিবস রজনীভর অনাহত সময়
কার জন্য অভিমান , কার জন্য হৃদয় পতন ।

প্রতীক্ষার প্রহর।। মনিরা ফেরদৌসী মনি


তোমারই প্রতীক্ষায় কাটিয়েছি
আমি কত নিদ্রাহীন রাত --,
তুমি আসবে বলে বিছায়ে রেখেছি
লাল গোলাপের পদ্ম আসন ।।
তোমাকে ভেবেছি
স্বপ্নের ক্যানভাসে
কখনও নীল অথবা সবুজে --,
ঘুমের মাঝে জেগেছি কতবার
শুধু তোমার প্রতীক্ষার প্রহর গুনে ।।
ভুলে গেছি আমি কি
দিয়ে সাজাবো তোমায় --,
লোকালয় ছেড়ে
চলে যাব দূরে ।।
বিস্তীর্ণ মরুচরে
সীমাহীন প্রান্তরে --,
আকাশ মিশেছে
যেখানে মাটির সাথে ।।

জানি তুমি বহুদূরে ।। ফাহমিদা ইয়াসমিন


আমি তোমার জন্য পথ চেয়ে বসে আছি,
তোমাকে ভালোবাসি বলে আমি নির্ঘুম কাটায় রাত।
জানি তুমি বহুদূরে
তবু আছ আমার হূদয় জুড়ে।
দূরে থাকার মানে এই নয়_ মনেরও দূরে।

স্বপ্ন যদি অস্থির মনের পাশে এসে দাঁড়াতো,
তোমাকে ছুঁয়ে যাই কত স্বপ্নের সাজে,
সপ্নই তোমাকে জাগিয়ে রাখে আমার মনে।